পূর্ব ইতিহাস
১৮৭৪ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে ঢাকায় আহসান উল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমানের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) স্থাপিত হয়। তৎকালীন আসাম ও অবিভক্ত বাংলায় সেটিই ছিল একমাত্র কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র। ৪ বৎসর মেয়াদি Uper Subordinate কোর্স দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কোর্স শেষে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীহণ ওভারসিয়র হিসেবে নিয়োগ পেতেন। পরবর্তীতে উক্ত Uper Subordinate কোর্সকে তিন বৎসরে রূপান্তরের মাধ্যমে Licenciate in Engineering নামে পরিবর্তন করা হয়।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল এবং তিন বৎসর মেয়াদি ডিপ্লোমা স্তরের প্রকৌশল শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। পরবর্তী কালে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং সে সময় ডিপ্লোমা স্তরের প্রকৌশল শিক্ষার পাশাপাশি ডিগ্রি স্তরের প্রকৌশল শিক্ষা প্রবর্তিত হয়। সে সময় ডিপ্লোমা স্তরের প্রকৌশল শিক্ষার নামকরণ ছিল Associate in Engineering।
১৯৪৯ এর ফেব্রুয়ারীতে Council of Technical Education in Pakistan এর রিপোর্ট মোতাবেক ১৯৫৫ সালে করাচী ও ঢাকায় দু’টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়। তৎকালীন সি. এল. আই. ডিপার্টমেন্টের অধীনে আমেরিকার ফোর্ড ফাউন্ডেশন-এর অর্থানুকুল্যে স্থাপিত হয় বর্তমানের ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, তখন যার নাম ছিল ইস্ট পাকিস্তান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (ইপিপিআই)। আমেরিকার ওকলাহামা স্টেট ইউনিভার্সিটির কারিকুলাম অনুসরনে পরিচালিত তিন বৎসর মেয়াদি চারটি টেকনোলজিতে (সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও পাওয়ার) ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পরিচালিত ডিপ্লোমা স্তরের কোর্সটি Associate in Engineering নামে প্রত্যয়ন হতো।
তৎকালীন আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পরিচালিত ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা স্তরের কোর্সে প্রকৌশল বিষয়ে বস্তুগত ব্যবধান ছিল খুব কম, কিন্তু চাকরিতে বেতন, পদমর্যাদা ও সুযোগ সুবিধাগত ব্যবধান ছিল বিরাট। ফলে সে সময়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে শুরু হয়। তাঁরা সংঘবদ্ধ হবার চেষ্টা করতে শুরু করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়।
ষাটের দশকের শেষ ভাগ থেকে শুরু হয় দেশের তৎকালীন প্রতিটি শহরে একটি করে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রক্রিয়া। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মোট ১৭টি পলিটেকনিক স্থাপিত হয়।
১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে ৩টি নতুন পলিটেকনিক স্থাপিত হয়।
১৯৯৫ সালে বেসরকারী উদ্যোগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৫৪টি বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়। চাকরিগত সুযোগ সুবিধা ও উচ্চ শিক্ষার জন্য ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমা প্রকৌশল কোর্সের ছাত্রদের দীর্ঘ আন্দোলন অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। ১৯৭৮ সালে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে অর্জিত হয় একটি সরকারি নির্দেশ। যা ৩১ শে জুলাই ১৯৭৮ এর জি.ও (Government Order) নামে পরিচিত।
উক্ত নির্দেশে প্রকৌশলীদের চাকরিতে প্রাথমিক নিযুক্তিতে সর্ব ক্ষেত্রে একই পদমর্যাদা (Uniform Designation) হিসেবে উপসহকারী প্রকৌশলী নির্ধারণ করা হয় এবং যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরবর্তী উচ্চতর সহকারী প্রকৌশলী পদের এক তৃতীয়াংশে পদোন্নতির নির্দেশ জারি হয় এবং তারপর সাধারণ নিয়মে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরবর্তী উচ্চতর পদসমূহে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত জারি হয়।
বর্তমানে এই প্রক্রিয়ায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ নিয়োগ ও পদোন্নতি লাভ করছেন। ১৯৭৭-৭৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উচ্চ শিক্ষার রুদ্ধদ্বার উন্মোচিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। নভেম্বর’৯৪ এক সরকারি নির্দেশে সরকারি ও স্বায়ত্ত্ব শাসিত সংস্থায় কর্মরত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ প্রাথমিক নিযুক্তিতে (উপসহকারী প্রকৌশলী পদে) দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড পদমর্যাদা লাভ করেন। ডিসেম্বর’৯৪ এ অপর সরকারী নির্দেশে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাথমিক নিযুক্তিতে বেতন ক্রম সহকারী প্রকৌশলী পদের পরের ধাপে নির্ধারণ করা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে সহকারী প্রকৌশলী পদটি প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা সম্পন্ন।
ভর্তি প্রক্রিয়া
এসএসসি/সমমানের পরীক্ষার(ক্ষেত্র বিশেষ এইচএসসি) পর শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পূরণকৃত ভর্তি ফরম এবং নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে আবেদন করতে হবে। অতঃপর নির্দিষ্ট তারিখে পরীক্ষা দিতে হবে। উল্লেখ্য যে প্রথমে প্রথম শিফটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তারপর দ্বিতীয় শিফটের। সায়েন্স, কমার্স, আর্টস, মাদ্রাসা যে কেউ ভর্তির আবেদন করতে পারে।
ভর্তির যোগ্যতা
এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে কমপক্ষে জিপিএ ৩.০০ সহ ন্যূনতম ৩.৫০ জিপিএ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। তাছাড়া এসএসসিসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ০২(দুই) বছর মেয়াদী ট্রেড কোর্স পাস করা প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে বয়সের সময়সীমা অনুর্ধ্ব ২২ বছর।
মেধা তালিকা প্রণয়নের ভিত্তি
- এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ কে ১০ দ্বারা গুন করে প্রাপ্ত নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়।
- সমান নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিত/জীব বিজ্ঞান, ইংরেজী, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞান বিষয়ে বেশী পয়েন্ট পাওয়া প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
গ্রেডিং পদ্ধতি
প্রাপ্ত নম্বর | লেটার গ্রেড | গ্রেড পয়েন্ট (GP) |
---|---|---|
৮০% এবং তার উপর | A+ | ৪.০০ |
৭৫% থেকে ৮০% এর নিচে | A | ৩.৭৫ |
৭০% থেকে ৭৫% এর নিচে | A- | ৩.৫০ |
৬৫% থেকে ৭০% এর নিচে | B+ | ৩.২৫ |
৬০% থেকে ৬৫% এর নিচে | B | ৩.০০ |
৫৫% থেকে ৬০% এর নিচে | B- | ২.৭৫ |
৫০% থেকে ৫৫% এর নিচে | C+ | ২.৫০ |
৪৫% থেকে ৫০% এর নিচে | C | ২.২৫ |
৪০% থেকে ৪৫% এর নিচে | D | ২.০০ |
৪০% এর নিচে | F | ০.০০ |
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সংখ্যা
বর্তমানে ৪৯টি সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। এর মধ্যে পুরোনো ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ২০টি, যেগুলো পুরোপুরি সরকারি। নতুন রাজস্বভুক্ত ইনস্টিটিউটের সংখ্যা পাঁচটি, মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট তিনটি, প্রকল্পভুক্ত ১৮টি ও মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সংখ্যা তিনটি।
বেসরকারী পলিটেকনিকের সংখ্যা ২৭৫টি
সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট[সম্পাদনা]
[৪] [ইংরেজী বর্ণক্রমানুসারে]
cpi praivet polytechnical
উত্তরমুছুনPrivate Polytechnic - ISIT Polytechnic Institute
উত্তরমুছুন